সারা দেশে চলমান অস্থিরতায় লাগামহীন হয়ে পড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে হু হু করে প্রতিদিন বাড়ছে দ্রব্যমূল্যের বাজার। ফলে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন ভোক্তারা। উচ্চ সুদ হারের মধ্যে দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকায় মূল্যস্ফীতির প্রভাবে হিমশিম খাচ্ছেন কক্সবাজারসহ সারা দেশের মানুষ। গত এক সপ্তাহের মধ্যে উখিয়ায় সর্বোচ্চ বেড়েছে কাঁচা মরিচ, তরিতরকারি, শাকসবজি, মাছ, পেঁয়াজ, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ প্রায় সব ভোগ্যপণ্যের দাম। বিশেষ করে ডিমের বাজারে ভয়াবহ অস্থিরতা। ডজনে দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। এখন মাছ-মমাংসের দামও বেশি। এমন সময় নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের ভরসা ডিম। তবে এই পণ্যের দাম হঠাৎ করে অস্থির হয়ে যাওয়ায় উম্মা প্রকাশ করছেন অনেকে। দেশে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে ২০২০ সালের প্রথম ভাগ থেকে। ওই বছর মার্চে করোনার সংক্রমণ শুরু হয়। তখন মমূল্যবৃদ্ধির কারণ ছিল আতঙ্কের কেনাকাটা। ২০২০ ও ২০২১ সালে মূল্যস্ফীতি তবু লাগামছাড়া হয়নি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থথায় বিঘ্ন ঘটে। জ্বালানি তেল, গ্যাস ও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। এতে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকে। ২০২৩ সালের মাঝামাঝিতে এসে বিশ্ববাজারে জ্বালানি ও খাদদ্যপণ্যের দাম অনেকটাই কমে যায়। কিন্তু বছরখানেকের মধ্যে দেশে ডলারের দাম ৮৬ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১১৩ টাকা ( আমদানিতে)।আর আমদানিতে পর্যাপ্ত ডলারও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল, প্রাণিখাদ্য- সবকিছুর দাম বেড়েছে, যা বাড়িয়ে দিয়েছে জীবনযাত্রার ব্যয়। যার ধারাবাহিকতা রয়েছে ২০২৪ সালেও। বিশেষ করে সম্প্রতি ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের ফলে সারা দেশে চলমান অস্থিরতায় যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানান অজুহাতে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট উখিয়ায় প্রায় সব ধরনের শাকসসবজি, মাছ, মাংস, মুরগিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মধধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মান ৮৪ থেকে ১১৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা ভোক্তাদের ওপর মারাত্নক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি জ্বালানির দামও বেড়েছে, বেড়েছে সুদ হার। এসবের প্রভাব পড়েছে ভোক্তা বাজারে। মোহাম্মদ ইউনুসের মতো একই কথা জানালেন আরও অনেকে।কক্সবাজারের উখিয়ায় মিয়ানমারের নাগরিক লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের বসবাস। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বাজারগুলোতে পণ্যের দাম যাচাই-বাছাই করা হয়না। সেখানে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় ক্রেতা সমাগম বেশি হওয়ায় বেচা-বিক্রিও খুব ভালো হয় বলে জানালেন ব্যসায়ী শাহ আলম। উখিয়া, কোটবাজার ও কুতুপালং বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৬ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি ও পাকিসস্তানি বংশোদ্ভুত সোনালি মুরগির দাম গত সসপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়ললার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩৫ টাকায় সোনালি মুরগি ৩৮০ টাকায়। দেশি মুরগি ৫০০ টাকায়। দারোগা বাজারে লইট্রা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, চাঁদা মাছ ৮০০ টাকায়, চিংড়ি মাছ ১০০০ টাকায়। খাল-বিল ও নদীর মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকায়। উখিয়া সদর দারোগা বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা, টমেটো, ২৪০ টাকা, ঢ়েঁড়স ১০০ টাকা, ঝিঙ্গা ১০০ টাকা, কাকরোল ১০০ টাকা, পেঁয়াজ ১১০ টাকা, রসুন ২১০ টাকা, চাল, আটা, দুধ, সয়াবিন, সুগন্ধি চালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
m
হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া নিউজ ডটকম
পাঠকের মতামত